আলমগীর কবীর
ঢাকার শ্যামবাজার ফরাসগঞ্জে বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা খবরের সময়কে জানিয়েছেন, ডুব দিলেই মিলছে মরদেহ। কর্তৃপক্ষের দাবি, লঞ্চটিতে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, লঞ্চটিতে প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে অনেক যাত্রী সাঁতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের জন্য ছুটে আসা প্রিয়জনরা হাসি মুখে ফিরছেন। তবে লঞ্চের যাত্রীদের বড় অংশই তীরে উঠতে সক্ষম হননি।
ডুবে যাওয়া লঞ্চের জীবিত উদ্ধার হওয়া যাত্রী মো. মাসুদ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে খবরের সময় প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি কেবিনে ছিলাম। গ্লাস খুলে আমি বের হইছি। ভেতরে আমার আপন দুই মামা ছিলেন। তারা তো বের হতে পারেননি। তাদের খোঁজ করছি।’ তার নিখোঁজ থাকা দুই মামা হলেন- আফজাল শেখ ও বাচ্চু শেখ।
এদিকে, দুপুরে লঞ্চডুবিতে আহত অবস্থায় দুইযাত্রীকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার পতিবেদককে বলেন ‘লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিলেন, এখন আর আনুমানিক বলা যাচ্ছে না। তবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ডুব দিলেই তাদের হাতে পায়ের সঙ্গে মরদেহ বাঁধছে।’
কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া উইং এর কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হায়াৎ ইবনে সিদ্দিক প্রতিবেদককে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন নারী, ২৩ জন পুরুষ এবং ৩ জন শিশু রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত সন্দেহ থাকবে এখনও মরদেহ থাকতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোস্টগার্ডের উদ্ধার অভিযান চলমান থাকবে।’
এদিকে লঞ্চডুবির পর সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌ বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও স্থানীয় মানুষজনও সহায়তা করছেন।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ফরাশগঞ্জ-শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।
জানা যায়, সকাল পৌনে ৮টার দিকে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথে ফরাশগঞ্জ এলাকায় ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ডুবে যায় সেটি। কেরানীগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ড থেকে মেরামত শেষে ময়ূর-২ নদীতে নামানোর সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চটি থেকে কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠলেও এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, নিখোঁজদের তথ্য জানতে স্বজনদের ০১৭১৬-০২৬৭০৪ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।